এস এস ডি (SSD) কি? এস এস ডি (SSD) এর পরিচিতি ও বিস্তারিত।

কম্পিউটার অপারেটিং এর ক্ষেত্রে  (SSD) এস এস ডি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বা কম্পোনেন্ট। বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে কম্পিউটারের গতি কে আরও ত্বরান্বিত করার জন্য এসএসডি আবিষ্কার করেছেন। এসএসডি (SSD) আবিষ্কৃত হওয়ার পর কম্পিউটারের কাজকে আরো গতিময় করেছে। এতে যে কোন কাজ দ্রুততার সহিত কম্পিউটার করে ফেলতে পারছে। এসএস ডি (SSD) যত দ্রুততার সহিত একটি কাজ সমাধান করতে পারে হার্ডডিস্ক দ্বারা সম্ভব নয়। সে কারণে বর্তমানে হার্ডডিস্ক এর পরিবর্তে এসএসডি বহুল ব্যবহার হচ্ছে।

এস এস ডি (SSD) কি? এস এস ডি (SSD)

 

সূচিপত্রঃ বিভিন্ন ধরনের এস এস ডি (SSD)।

 

এস এস ডি (SSD) পরিচিতিঃ

হার্ডডিস্ক আসলে একটি ভারি ডিভাইস যার মধ্যে একটি সিলিন্ডার কয়েকটা ডিস্ক এবং সার্কিট সহ রিট বা রাইট করবার জন্য থাকে ইলেকট্রিক ডিভাইস এবং এর সঙ্গে ম্যাগনেট সংযুক্ত থাকে। এটিকে ঢাকবার জন্য একটি স্টিলের হেভি হার্ডি কাভার ব্যবহার করা হয়। এহং এই কাভারের উপরে একটি সার্কিট বা পিসিবি ব্যবহার করা হতো যেটি বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে হার্ডডিস্ক কে ত্বরান্বিত করে। ডাটা কেবল এর মাধ্যমে মেমোরি ইনপুট হয় এবং আমরা তা আউটপুট ডিভাইসের মাধ্যমে দেখতে পাই।

 

কিন্তু বর্তমানে এসএস ডি (SSD) এর সঙ্গে হার্ডডিক্সের কম্পেয়ার করলে দেখা যায় যে হার্ডডিক্স এর চেয়ে এসএসডি (SSD)অনেকাংশে ক্ষুদ্র এবং ওয়েটের দিকেও অনেক কম। আসলে এসএস ডি এটি একটি সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক সার্কিট বা কম্পনেন্ট যা ic সম্বলিত। সাধারণত এসএস ডি (SSD) হার্ডডিস্ক এর চেয়ে অনেক লঙ্গজিবিটি হয় যার ফলে এর মধ্য হতে কোন ডাটা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। সে ক্ষেত্রেও আমরা অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দভাবে যেকোনো ডাটা এসএস ডি (SSD) তে স্টোর করে রাখতে পারি এবং পরবর্তীতে তা খুব সহজে ব্যবহার করতে পারি। যেহেতু এটি পুরোপুরি ইলেকট্রিক ডিভাইস বটে সে কারণে হার্ডডিস্ক এর চেয়ে এসএসডি (SSD) অত্যন্ত দ্রুত গতি সম্পন্ন। তাই বর্তমানে এর চাহিদা ব্যাপক।

 

এসএস ডি (SSD) এর পূর্ণ নাম  Solid State Drives সলিড ইস্টেট ড্রাইভ। এস এস ডি মূলত হার্ডডিক্সের বিকল্প স্টোরেজ হিসেবে  ব্যবহার করা হয়। এক কথায় বলতে গেলে এস এসডি হচ্ছে একটি ইলেকট্রনিক স্টোরেজ যেটাতে আমরা বিভিন্ন ডাটা সংরক্ষণ করতে পারি। এসএসডি হার্ডডিস্কের থেকে তিন গুণ বেশি দ্রুত ডেটা স্থানান্তর করতে পারে।  যেখানে একটি হার্ডডিক্সের সর্বোচ্চ রিড রাইট স্প্রীড থাকে ২০০ এমবিপিএস আর একটি এসএসডি রিড রাইট স্পিড ৫০০ থেকে ৬০০ এমবিপিএস প্রকার ও কোম্পানির ভেদে তার থেকেও বেশি হয়ে থাকে। এসএসডি অতি অল্প পাওয়ার কনজুম করে কাজ করতে পারে। এসএসডি বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে।

বর্তমানে মাদারবোর্ড এর উপর ভিত্তি করে এসএস ডি তিন ধরনের হয়ে থাকে।

যেমনঃ

  •  সাটা এস এস ডি ( SATA SSD )
  •  এম ডট টু এসএসডি ( M.2 SSD )
  •  এন ভি এম ই এসএসডি ( NVMe SSD )

M.2 এবং NVMe SSD কে  PCIe SSD বলা হয়।

সাটা এস এস ডি ( SATA SSD ):

যেটাকে আমরা সাটা এসএসডি বা জেনারেল এসডি বলে থাকি এটি নিয়ে আলোচনা করা যাক। এটি সাধারনত ডেক্সটপে এবং ২০১০ সালের পূর্বের তৈরি ল্যাপটপগুলোতে ব্যবহার করা হয়। কারণ এ সকল ডেক্সটপে এই সকল সাটা এসএস ডি পোরটের সঙ্গে মাদারবোর্ডের মিল পাওয়া যায়। তেমনি ভাবে ল্যাপটপের হার্ডডিস্ক এর পোরটের সঙ্গেও মিল থাকে, সে কারণে সকল সাটা এস এস ডি গুলো পুরাতন ল্যাপটপে ব্যবহার করে ল্যাপটপের গতি আরো উত্তর বৃদ্ধি করা সম্ভব। তাই ল্যাপটপের পুরানো এইচ ডি ডি অর্থাৎ হার্ডডিস্ক ড্রাইভ খুলে যথাস্থানে সাটা এসএস ডি বসিয়ে উইন্ডোজ সেটাপ করলেই হার্ডডিস্ক এর চেয়ে সর্বোচ্চ তিন গুণ গতিতে কাজ করবে ল্যাপটপ। সে কারণে বর্তমানে এই সকল ল্যাপটপগুলোতে ছাটা এসএস ডির বহুল ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। পূর্বেই বলেছি এটি একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বা কমপনেন্ট যা অতি দ্রুত গতিতে কম্পিউটারের যে কোনো কাজ করতে সক্ষম। এসএস ডির প্রচলন ২০১০ সাল হতে শুরু হয়। কারণ এই সময় হতে এই এসএস ডির দাম কমতে শুরু করে। সে কারণেই এর ব্যবহার এ সময় থেকে শুরু ।

এম ডট টু এসএস ডি ( M.2 SSD ):

এম ডট টু এসএস ডির কথায় আসা যাক। আসলে এটি ২.৫ ইঞ্চি সাটা এসএসডি র মত দীর্ঘ বা বড় নয়। এটি র‌্যাম এর মত লম্বা আকৃতির একটি সার্কিট। এম ডট টু এই এসএস ডি সকল ধরনের মাদারবোর্ড বা ল্যাপটপে ব্যবহার করা যায় না। কারণ যে সকল মেইনবোর্ড বা ল্যাপটপের মেইনবোর্ডে এর স্লট রয়েছে বা পিসিআই স্লট রয়েছে শুধু সে সকল মাদারবোর্ড গুলোতেই এজাতীয় এম ডট টু এসএস ডি ব্যবহার করা সম্ভব। তাই মাদারবোর্ড কিনার পূর্বে সাবধানতার সঙ্গে চিন্তাভাবনা করে মাদারবোর্ড ক্রয় করা উচিত। এম ডট টু এসএস ডি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যেমন এম ডট টু ২২৮০, এম ডট টু ২২৬০, এম ডট টু ২২১১০। তবে আমাদের দেশে সাধারণত এম ডট টু ২২৮০ এটি বেশি প্রচলিত। তবে বলে রাখা ভালো শুধু এম ডট টু এবং সাটা এসএসডির মধ্যে স্পিডের তেমন কোন পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। এই দুটি এসএসডির গতি একই।

 

এন ভি এম ই এসএস ডি ( NVMe SSD ):

এম ডট টু এন ভি এম ই এসএস ডি এটি শুধু M.2 ssd এবং ছাটা এসএস ডির চেয়ে অনেক বেশি গতিসম্পন্ন। তাই বর্তমানে বাজারে যে সকল মেইন বোর্ড আসছে সে সকল মেইনবোর্ড গুলি এম ডট টু এন ভি এম ই স্লট সাপোর্টেড। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় এই যে, এন ভি এম ই এস এস ডি থ্রি জেন (3rd gen) এবং ফোরজেনের  (4th gen)হয়ে থাকে বর্তমানে থ্রি জেন (3rd gen) এম ডট টু এন ভি  এম এস এস ডি বাজারে বহুল প্রচলিত। এর রিডিস্পিড সাধারণত ৭ হাজার এমবিপিএস।

এসএস ডির ধারন ক্ষমতা বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে যেমন ১২০ জিবি, ১২৮ জিবি, ২৪০ জিবি, ২৫৬ জিবি, ৫০০জিবি, ১০০০ জিবি বা ১ টেরাবাইট ইত্যাদি।

 

আরও পড়ুনঃ মাদারবোর্ড (Motherboard) বা মেইনবোর্ড (পি সি বি pcb) কি? এর বর্ণনা দাও।

 

বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গবেষকগণ প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কম্পিউটারের গতিকে আরো ত্বরান্বিত করার জন্য। এবং পদে পদে তা সফলকামো হচ্ছেন। তাই সেটির আলোকে ভিত্তি করে বলা যেতে পারে যুগে যুগে এস এসডির মত আরো অনেক শক্তিশালী কম্পনেন্ট তৈরি হবে যা একসময় এই এস এস ডিকেও হার মানাবে আমরা সে অপেক্ষায় রইলাম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top